Ration dealers: রেশন ডিলারদের সিদ্ধান্তে চরম দুর্ভোগে রাজ্যবাসী! মাসের শেষে মিলছে না রেশন

রাজ্যের রেশন ডিলারদের কড়া সিদ্ধান্তের জেরে দুর্ভোগে পড়ছেন রাজ্যবাসী। কবে পাবেন রেশন? উদ্বেগে সাধারণ মানুষ।

দেশের সাধারণ মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য সরকারের তরফ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেশন ব্যবস্থা পরিচালনা করা হয়। আমাদের দেশে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জীবন অনেকটাই নির্ভর করে সরকার থেকে প্রদান করার রেশন এর খাদ্য সামগ্রীর উপর। আমাদের রাজ্যের মানুষরাও এর অন্যথা নন। রেশন কার্ড আছে এমন উপভোক্তারা সরকারের কাছ থেকে চাল, গম ইত্যাদি নানা ধরনের খাদ্যশস্য ও নানা সামগ্রী পেয়ে থাকেন। এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অথনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষরা অন্ন সংস্থানের সুরাহা করতে পারেন।

একটা সময় পর্যন্ত রেশনের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী লাভ করার জন্য গ্রাহকদের অর্থ ব্যয় করতে হতো। সেই অর্থের পরিমাণ সামান্য হলেও মূলত টাকা দিয়েই রেশন কিনতে হতো বলা চলে। তবে করোনা মহামারী আমাদের দেশে তার করাল প্রভাব বিস্তার করার পর দেশের অসহায় মানুষ দের কথা ভেবে সরকারের পক্ষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দেওয়া হয়। এখনো পর্যন্ত বিনামূল্যেই রেশন ব্যবস্থা উপভোগ করেন গ্রাহকরা। তবে এই রেশন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশ তথা আমাদের রাজ্যের নানা প্রান্তে বহু অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে। কখনো গ্রাহকদের তরফ থেকে আবার কখনো রেশন ডিলারদের একাংশ বারবার নানা অভিযোগে সামিল হয়েছেন। রেশন ডিলাররা রেশন দেওয়ার নাম করে জালিয়াতি করছেন এমন খবরও বারবার শোনা গেছে।

তবে এসবের মধ্যেই এবার বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো রেশন ডিলারদের সংগঠন। রেশন দোকান গুলিকে এবার হঠাৎ করে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল তারা। হঠাৎ রেশন দোকান গুলিতে তালা ঝোলায় বিভ্রান্তির মুখে পড়েছেন রেশন গ্রাহকরা। অনেকেই সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী তোলেন। কবে রেশন দোকান আবার খুলবে, কবে থেকে আবার রেশন সামগ্রী পাবেন সেই সব বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত গ্রাহকরা।অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন এর তরফ থেকে রেশন দোকান বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই অসুবিধা সম্মুখীন হতে হবে বহু রেশন গ্রাহককে।

বিশেষ সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির এক রেশন ডিলার আত্মহত্যা করেন। তার আত্মহত্যার জেরেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে রেশন ডিলারদের সংগঠন। জানা যাচ্ছে ই-পস মেশিনে অনেক ক্ষেত্রেই খাদ্য সামগ্রী মজুত রাখার পরিমাণ ভুল দেখাচ্ছে। এই কারণে রেশন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে গ্রাহক সহ রেশন ডিলারদের মধ্যেও। অন্যান্য রেশন ডিলাররা দাবি করছেন মৃত রেশন ডিলার সুকুমার দাস ই-পস সংক্রান্ত একটি ভুল তথ্য নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আর এই মানসিক অবসাদের কারণে তিনি আত্মহত্যার মতো এই কঠিন সিদ্ধান্ত বেছে নিয়েছেন।

এই কারণেই রেশন ডিলারদের সংগঠন দাবি জানাচ্ছে বারবার খাদ্য দপ্তরের উচ্চ আধিকারিকদের কাছে আবেদন জানিয়ে, তাদের কাছে এই সমস্যার সমাধান চেয়ে কোন লাভ হয়নি। ফলে আরো অন্যান্য রেশন ডিলাররা অবসাদে ভুগে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাই তাদের জীবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গত শুক্রবার রাজ্যের সমস্ত রেশন দোকান বন্ধ রাখার ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিজেদের দাবি নিয়ে বারবার রেশন ডিলাররা যদি ধর্মঘট চালিয়ে যান সে ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হবে রাজ্যের গরিব মানুষদের। তাই এ প্রসঙ্গে সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য দপ্তর কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেটাই দেখার।

প্রয়োজনীয় লিঙ্ক: