প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখেন কোটিপতি হওয়ার। কিন্তু সাধ থাকলেও সব সময় সেই সাধ পূরণ করতে পারেন না সাধারণ মানুষ। অনেক বেশি পরিশ্রম করে উপার্জন করলেও কোটি টাকা জমানোর সুযোগ হয়ে ওঠে না। তবে সঠিক নিয়ম মেনে বিনিয়োগ করলে আপনার কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। তবে তার জন্য মেনে চলতে হবে অর্থ বিনিয়োগ করার বিশেষ কিছু নিয়ম কানুন।
বর্তমানে অর্থ বিনিয়োগ করার যেমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে ঠিক তেমনি অনেক ধরনের লাভজনক স্কিমও আছে। অনেকে যেমন শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ড ইত্যাদি স্থানে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন ঠিক তেমনি অনেকে অর্থ বিনিয়োগ করার ভরসাযোগ্য স্থান হিসেবে বেছে নেন সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক ও পোস্ট অফিস কে। কেউ আবার অর্থ বিনিয়োগ বিনিয়োগ করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখেন। তবে আজ আপনাদের এমন একটি স্কিমের কথা বলবো যার মাধ্যমে ১২,৫০০ টাকা জমা করেই মিলবে কোটিপতি হওয়ার সুযোগ।
বিশেষ এই স্কিমটি হলো পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা PPF। এই স্কিমে অর্থ বিনিয়োগ করলে একদিকে যেমন কোনরকম ঝুঁকি থাকে না ঠিক তেমনি মোটা সুদের হারে টাকা জমা হয়ে মেয়াদপূর্তিতে অনেকটা বেশি টাকা রিটার্ন হিসেবে পাওয়া যায়। প্রবীণ ব্যাক্তিদের অবসর জীবনকে আর্থিক ভাবে সুনিশ্চিত করার জন্যও কেন্দ্র সরকারের একটি জনপ্রিয় স্কিম হলো এই পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা PPF। এই স্কিমের মাধ্যমে অর্থ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী যে কোন ব্যক্তি তার নিকটবর্তী পোস্ট অফিস বা যে কোনো ব্যাংক থেকেই পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা PPF এ বিনিয়োগ করার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে পারেন।
এই পিপিএফ স্কিমের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় অর্থ হলো ১০০ টাকা। তবে প্রতি অর্থবছরে এই স্কিমে অন্তত ৫০০ টাকা জমা দিতে হয়। এই স্কিমে বছরে সর্বাধিক ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারেন অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তিরা। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখা প্রয়োজন কোনো ব্যাক্তি না চাইলে এই টাকা একবারে জমা না করে প্রতি মাসে মাসেও জমা করতে পারেন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তি প্রতি মাসে সর্বাধিক এই স্কিমে ১২,৫০০ টাকা জমা করতে পারবেন। এই স্কিমের সবথেকে সুবিধা জনক বিষয়টি হল আয়কর ধারা ৮০সি অনুযায়ী এই স্কিমে কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে।
এই স্কিমে অর্থ বিনিয়োগ করার লক ইন পিরিয়ডটি হলো ১৫ বছর। তবে গ্রাহক চাইলে ১৫ বছর পর এর মেয়াদ শেষ হলে আরও ৫ বছর করে স্কিমের মেয়াদ বাড়াতে পারবেন। বর্তমানে এই স্কিমে ৭.১ শতাংশ হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে। যদি কোনো বিনিয়োগকারী এই স্কিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ১২৫০০ টাকা অর্থাৎ বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন এবং মেয়াদ সেজে আরো দুই বার ৫ বছর করে লক ইন এর সময়সীমা বাড়ান তবে তিনি এই স্কিমের মাধ্যমে কোটি টাকা লাভ করতে পারবেন। মেয়াদ শেষে অর্থাৎ ১৫ বছর লক ইন পিরিয়দের সঙ্গে আরও দুই বার কন্ট্রিবিউশন সহ মেয়াদ বাড়ানো যায় সেক্ষেত্রে ২৫ বছর পর ওই বিনিয়োগকারীর মোট অমানতের পরিমান হবে ৩৭৫০০০০ টাকা। এর সঙ্গে ৭.১ শতাংশ সুদের হারে ৬৫৫৮০১৫ টাকা সুদ পাবেন তিনি। অর্থাৎ সম্পূর্ন মেয়াদ শেষে তিনি পাবেন ১,০৩,০৮,০১৫ টাকা। কোনো ব্যক্তি যদি এই পরিমাণ বিনিয়োগ নিজের ২৫ বছর বয়স থেকে শুরু করেন তাহলে ৫০ বছর বয়সেই তিনি এর মাধ্যমে কোটিপতি হতে পারবেন।