বর্তমানে অর্থ বিনিয়োগ করার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমাদের চারপাশে দেখা গেলেও অনেকেই শেয়ার বাজারে এবং SIP এর মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে বিনিয়োগের কিছু ঝুঁকি থাকলেও দুর্দান্ত সুদের হারে মোটা টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব হয়। এতে মূলত নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। SIP তে আবার মাসিক ৫০০০ টাকা বিনিয়োগে ৩৩ লক্ষ টাকা লাভ করা সম্ভব। তবে অনেকেই SIP বা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান এর মাধ্যমে কিভাবে বিনিয়োগ করা সম্ভব সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানেন না। আজ সেই বিনিয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের জানাবো এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
SIP কি? (Systematic Investment Plan)
SIP শব্দের সম্পূর্ণ অর্থ হল সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিয়ম মাফিক বিনিয়োগ করা। এক্ষেত্রে আপনি যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রতি মাসে ১ তারিখে বিনিয়োগ করেন সেক্ষেত্রে আপনার প্রত্যেক মাসে মাসে ১ তারিখে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ একাউন্ট থেকে কেটে নিয়ে বিনিয়োগ করা হবে।
প্রকারভেদ:-
SIP মূলত মিউটুয়াল ফান্ড এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। গ্রাহকের সুবিধার্থে এক্ষেত্রে বিনিয়োগের দুইটি প্রকারভেদ রাখা হয়। প্রথমত গ্রাহক বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে SIP বিনিয়োগ করতে পারেন, দ্বিতীয়ত ব্যাংক, অন্য কোনো ব্যক্তি বা এজেন্ট এর সাহায্যে অর্থ বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
SIP সুদের পরিমান:-
SIP বা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানের সুদ নির্ভর করে মিউটুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ ও তার বৃদ্ধির ওপর। এই সুদের পরিমাণ তাই স্থায়ী নয়। তবে মোটামুটি ৫ বছর ধরে ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করলে গ্রাহক ১২-১৪% সুদ লাভ করেন।
SIP সুবিধা:-
SIP বা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানে অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা গুলি হলো
১) এককালীন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একসাথে অনেক গুলি টাকা বের করা সাধারণ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পের বিশেষ সুবিধা হলো এতে মাসিক বিনিয়োগে সুবিধা আছে।
২) SIP তে প্রতিদিনের মতো শেয়ার বাজার সম্পর্কিত ধারণা লাভ করার প্রয়োজন নেই।
৩) দীর্ঘমেয়াদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে SIP তে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র:-
SIP করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন নথি হিসাবে প্রয়োজন হয় বিনিয়োগকারীর আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি।
SIP বিনিয়োগের সময়সীমা:-
এক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করার সময়সীমা সম্পূর্ন ভাবে নির্ভর করে গ্রাহকের পছন্দ অনুসারে। গ্রাহক যত বেশি সময় বিনিয়োগ করতে চান তিনি সেই সময়সীমা নিজে বেছে নিতে পারেন।
মাসিক ৫ হাজার জমিয়ে ৩৩ লক্ষ টাকা পাওয়ার পদ্ধতি:-
মিউটুয়াল ফান্ড গুলি থেকে সহজেই ১৫% রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। কোনো ব্যক্তি যদি মাসিক ৫০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন তবে ১২ মাসের শেষে তার মোট বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ হবে ৩ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে ১ বছরে তিনি সুদ পাবেন ১৪৮৪০৮ টাকা। অর্থাৎ ১ বছরে তার মোট রিটার্ন এর পরিমাণ হবে ৪৪৮৪০৮ টাকা। এই ভাবেই যদি তিনি ১৫ বছর ধরে অর্থ বিনিয়োগ করেন তবে ১৫ বছরে তার মোট জমাকৃত অর্থ হবে ৯ লক্ষ টাকা, সুদের পরিমাণ হবে ২৪৮৪৩১৫ টাকা। অর্থাৎ ১৫ বছর বিনিয়োগ করলে তিনি মোট পাবেন ৩৩৮৪৩১৫ টাকা।
টাকা তোলার পদ্ধতি:-
গ্রাহক নিজের সুবিধা মতো যখন ইচ্ছে টাকা তুলতে পারেন। তবে ১ বছরের আগে টাকা তুলে নিলে Short Term Capital Gain Tax কেটে নেওয়া হয় গ্রাহকের থেকে। এই ট্যাক্স এর পরিমাণ শুরু হয় ১ লক্ষ টাকা থেকে।